লামা ( বান্দরবান)প্রতিনিধি :
বান্দরবানের লামায় ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বগাইছড়ি খাল থেকে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে একটি অসাধু চক্র। তারা ওই সড়কের ছাগল্যা ঝিরির বেইলি ব্রিজ দিয়ে অতিরিক্ত বালু বোঝাই ট্রাক উঠায় ব্রিজ ভেঙে বন্ধ হয়ে গেছে সব ধরনের যানবাহন চলাচল। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বগাইছড়ি কমিউনিটি সেন্টার ও ছাগল্যা ঝিরি সড়কে চলাচলকারী যাত্রীদের। সরজমিন দেখা যায়, সেতুটির মাঝের অংশ ভেঙে পানিতে পড়ে আছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রীসহ যাতায়াতকারী মানুষজন। স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন বালু পরিবহন কাজে ব্যবহৃত ২০-২৫ টনের অধিক ১০-১২টি মিনি ট্রাক ও পিকআপ চলাচল করে ওই বেইলি ব্রিজের উপর দিয়ে। বালু বহন ও ব্রিজের নিচ থেকে বালু উত্তোলন না করার জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ নিষেধ করছিল এলাকাবাসী। কিন্তু এলাকাবাসীর নিষেধ বালু ব্যবসায়ীরা উপেক্ষা করেছে। ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে দু’পাড়ের দুই সহস্রাধিক মানুষ। পায়ে হেঁটে কোনোরকমে মানুষ পার হলেও ব্যবসায়ীরা মালামাল পারাপার নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে। বগাইছড়ি মালুম্যা খালের বিভিন্ন পয়েন্ট বালু উত্তোলনের জন্য খামখেয়ালিভাবে লাখ টাকায় ইজারা হচ্ছে। একটি পয়েন্ট ১-৩ বছরের জন্য বিক্রি হচ্ছে ২-৭ লাখ টাকায় বালু। তবে এটা জেলা প্রশাসক বা সরকারের পক্ষ থেকে নয়, স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় করা হচ্ছে।সরকারি তথ্যমতে, লামা উপজেলার কোথাও বালু মহাল ইজারা দেওয়ার কোন রেকর্ড নেই। বালু খেকো চক্রটি ট্রাকে ট্রাকে দিনরাত বালু উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। লামা ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বগাইছড়ি মালুম্যা খালের যেসব পয়েন্ট বিক্রি হয়, তার মধ্যে কমিউনিটি সেন্টার সংলগ্ন দুটি পয়েন্ট। ১টি এক বছরের জন্য বিক্রি হয় ৭০ হাজার টাকা।স্থানীয়রা সাংবাদিককে জানায়, বালু উত্তোলনে মোঃ ছাবের,মোঃ অবুল হোসেন,মোঃ আলাউদ্দিন,মোঃ রহমত, মোঃরমজান আলী মোঃকামাল সহ আরও অনেকে রয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, কাশেম, আলাউদ্দিন খাল থেকে বালু তুলে ট্রাক-পিকআপ দিয়ে পরিবহন করছে । এই চক্রটি কর্তৃক বালু উত্তোলনের ফলে খালের ভাঙ্গনে পাহাড়, চাষাবাদের জমি, জনবসতি, সরকারি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রীজ কালভার্টসহ গ্রামের রাস্তাঘাট ভেঙ্গে যাচ্ছে। বগাইছড়ি সড়কে একটি গার্ডার ব্রীজের তল থেকে বালু সরে গিয়ে বেইচের নীচে কয়েক ফুট পাইলিং দেখা যাচ্ছে। এভাবে বালু উত্তোলন হতে থাকলে ব্রীজটা একসময় ধ্বসে পড়তে পারে ; এমন আশংকা স্থানীয়দের।কিছুদিন আগে প্রশাসনের কড়াকড়ি ভূমিকার ফলে কয়েক সপ্তাহ বন্ধ ছিল বালু উত্তোলন।সম্প্রতি আবারো প্রতিযোগিতা দিয়ে দিনরাত বালু উত্তোলন চলছে। ওই ইউনিয়নের প্রভাবশালীরা এইসব অরাজকতার নেপথ্যে থাকায় সবাই ম্যানেজ হয়ে চুপ করে আছে বলে জানান, স্থানীয়রা।স্থানীয়রা জানান, একমাত্র সেনাবাহিনীর নজরদারিই পারে এই অরাজকতা রোধ করতে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নজরে আনা প্রয়োজন।